12
September, 2018
University Review
Jagannath University -জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার সদরঘাটে অবস্থিত একটি স্বায়ত্তশাসিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। পূর্বতন জগন্নাথ কলেজকে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘােষণার মাধ্যমে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরু। অধ্যাপক ড: এ. কে. এম. সিরাজুল ইসলাম খান এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করে ১৮৫৮ সালে এবং ২০০৫ সালে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫ পাশ করার মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ নেয়। এখানে প্রায় ২৩,০০০ ছাত্র-ছাত্রী এবং ১,০০০ জন শিক্ষক রয়েছেন।
ইতিহাস
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অব্যবহিত প্রাক্তন নাম জগন্নাথ কলেজ, এই নামেই বিংশ শতাব্দীর
অধিকাংশ সময় জুড়ে পরিচিত ছিল। এটি ঢাকার একটি ঐতিহ্যবাহী কলেজ। ১৮৫৪ সালে
ঢাকা ব্রাহ্ম স্কুল নামে এর প্রতিষ্ঠা হ্য। ১৮৭২ সালে এর নাম বদলে জগন্নাথ স্কুল করা হয়।
বালিয়াটির জমিদার কিশােরীলাল রায় চৌধুরী তার বাবার নামে জগন্নাথ স্কুল নামকরণ করেন। উল্লেখ্য কিশােরীলাল রায় শিক্ষাবিস্তারে আগ্রহী ছিলেন।
১৮৮৪ সালে এটি একটি দ্বিতীয় শ্রেণীর কলেজে ও ১৯০৮ সালে প্রথম শ্রেণীর কলেজে পরিণত হয়। এসময় এটিই ছিল ঢাকার উচ্চ শিক্ষার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা শুরু হলে জগন্নাথ কলেজের স্নাতক কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রির শিক্ষার্থী, শিক্ষক, গ্রন্থাগারের বই পুস্তক, জার্নাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার সাজাতে জগন্নাথ কলেজ। গ্রন্থাগারের ৫০ ভাগ বই দান করা হয়। জগন্নাথ কলেজে আই,এ, আই, এসসি, বি,এ (পাস) শ্রেণী ছাড়াও ইংরেজি, দর্শন ও সংস্কৃতি অনার্স এবং ইংরেজিতে মাস্টার্স চালু করা হলেও ১৯২১ সালে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর তা বন্ধ করে দেয়া হয় এবং ইন্টারমিডিয়েট কলেজে অবনমিত করা হয় জগন্নাথকে। পুরানাে ঢাকার নারী শিক্ষায় বাধা দূর করতে ১৯৪২ সালে সহশিক্ষা চালু করা হয়। ১৯৪৮ সালে তা বন্ধ করে দেয়া হয়। পরে ১৯৪৯ সালে আবার এ কলেজে স্নাতক পাঠ্যক্রম শুরু হয়। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মােহাম্মদ রফিকউদ্দিন (ভাষা শহীদ রফিক) আত্মত্যাগ করেন। ১৯৬৩ সালে অধ্যক্ষ সাইদুর রহমান পুনরায় কো-এডুকেশন চালু করেন। ১৯৬৮ সালে এটিকে সরকারীকরণ করা হয়, কিন্তু পরের বছরেই আবার এটি বেসরকারী মর্যাদা লাভ করে। ২০০৫ সালে জাতীয় সংসদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫ পাশের মাধ্যমে এটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরিত হয়। বর্তমানে মােট ছয়টি অনুষদের অধীনে ৩৬ টি বিভাগের ও ২টি ইন্সিটিউটের মাধ্যমে এখানে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। ২০শে অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস।
অনুষদ এবং ইন্সটিটিউটসমূহ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে মােট ছয়টি অনুষদে ৩৬ টি বিভাগ ও ০২ টি ইনস্টিটিউট রযেছে।
বিজ্ঞান অনুষদ
- কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ
- গণিত বিভাগ
- পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ
- পরিসংখ্যান বিভাগ
- মনােবিজ্ঞান বিভাগ
বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ
- হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ
- ফিনান্স বিভাগ
- মার্কেটিং বিভাগ
- ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ
সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদ
- ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন বিভাগ
- অর্থনীতি বিভাগ
- গণযােগাযােগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
- নৃবিজ্ঞান বিভাগ
- সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ
- সমাজকর্ম বিভাগ
- লােক প্রশাসন বিভাগ
- রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ।
লাইক এন্ড আসায়ন্স অনুষদ
- মাইক্রোবায়ােলজি বিভাগ
- ফার্মেসী বিভাগ
- বায়ােকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়ােলজি বিভাগ • জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়ােটেকনােলজি বিভাগ
- রসায়ন বিভাগ
- প্রাণিবিদ্যা বিভাগ
- উদ্ভিদ বিজ্ঞানবিভাগ
- ভূগােল ও পরিবেশ বিভাগ
কলা অনুষদ
- বাংলা বিভাগ
- ইংরেজি বিভাগ।
- নৃবিজ্ঞান বিভাগ
- দর্শন বিভাগ
- ইতিহাস বিভাগ
- ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ
- ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ
- চারুকলা ও গ্রাফিক্স বিভাগ
- নাট্যকলা ও সংগীত বিভাগ
আইন অনুষদ
- আইন বিভাগ
- ভূমি আইন ও ব্যবস্থাপনাইন্সটিটিউট
- ইন্সটিটিউট অফ মডার্ন ল্যাঙ্গুয়েজ(IML)।
- আই ই আর

Subscribe to our Awesome Newsletter.
12
September, 2018
University Review
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
১৯৫৩ সালের ৬ এপ্রিল যাত্রা শুরু করা ৭৫৩ একরের এই বিশাল সবুজ ক্যাম্পাসটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত। অস্ট্রেলিয়ান স্থপতি ডঃ সোনানি টমাসের পরিকল্পনায় নির্মিত এই ক্যাম্পাসটি যেমন পরিপাটি তেমনই সুন্দর। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগ আছে প্রায় ৬০টির কাছাকাছি এবং শিক্ষার্থী আছে প্রায় ৩৫০০০। তবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য পোড়াতে হয়েছিল অনেক কাঠ খড়।
দেশ ভাগের পূর্বে অর্থাৎ ইংরেজ শাসনামলে বর্তমান উত্তরবঙ্গে শিক্ষা ব্যবস্থার তেমন প্রসার না থাকায় ১৮৭৩ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় রাজশাহী কলেজ। কিন্তু বছরখানিক পর তা বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর যখন সব কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাভুক্ত করা হয় তখন রাজশাহীতে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার জন্য জনমত গড়ে ওঠে।
১৯৫০ সালে ৬৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। ১৯৫২ সালের ১০ এবং ১৩ ফেব্রুয়ারী এই কমিটি দুটি সভা কর। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার এই আন্দোলন এতটাই তীব্র আকার ধারন করে যে ১৫জনেকে সে সময় কারাবরণ করতে হয়। এরপর ১৯৫৩ সালের এক জনসভায় পূর্ববঙ্গীয় আইনসভার সদস্য প্রখ্যাত আইনজীবী জনাব মাদার বখশ , বিশ্ববিদ্যালয় তৈরী না হলে রাজশাহীকে আলাদা প্রদেশ ঘোষনার হুমকি দেন। তার এই হুমকি কাজে আসে। যার ফলশ্রুতিতে ১৯৫৩ সালের ৩১ মার্চ প্রাদেশিক আইন সভায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা আইন পাশ হয়। এবং একই বছর ৬ এপ্রিল থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় তার যাত্রা শুরু করে।
প্রথমদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাশ শুরু হয় রাজশাহী কলেজে।প্রশানিক কাজ চলে পাশের রেশম কুঠিতে। ১৯৫৬ সালে মতিহারে বিশ্ববিদ্যালয়টির নিজস্ব ক্যাম্পাস তৈরীর কাজ শুরু হয় এবং ১৯৬৪ নাগাদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় তার নিজস্ব ক্যাম্পাসে সম্পুর্ণভাবে নিজেদের কার্যক্রম শুরু করে।
বিশ্ববিদ্যালয়টি যেমন তৈরী হয়েছিল এক আন্দোলনের মাধ্যমে, তেমনি দেশের স্বাধীনা যুদ্ধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। যার প্রমাণ হয়ে আছেন শহীদ শামসুজ্জোহা,শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার,শহীদ হবীবুর রহমান স্যারদের মত শহীদ বুদ্ধিজীবীরা।

Subscribe to our Awesome Newsletter.