12
September, 2018
University Review
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
১৯৫৩ সালের ৬ এপ্রিল যাত্রা শুরু করা ৭৫৩ একরের এই বিশাল সবুজ ক্যাম্পাসটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত। অস্ট্রেলিয়ান স্থপতি ডঃ সোনানি টমাসের পরিকল্পনায় নির্মিত এই ক্যাম্পাসটি যেমন পরিপাটি তেমনই সুন্দর। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগ আছে প্রায় ৬০টির কাছাকাছি এবং শিক্ষার্থী আছে প্রায় ৩৫০০০। তবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য পোড়াতে হয়েছিল অনেক কাঠ খড়।
দেশ ভাগের পূর্বে অর্থাৎ ইংরেজ শাসনামলে বর্তমান উত্তরবঙ্গে শিক্ষা ব্যবস্থার তেমন প্রসার না থাকায় ১৮৭৩ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় রাজশাহী কলেজ। কিন্তু বছরখানিক পর তা বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর যখন সব কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাভুক্ত করা হয় তখন রাজশাহীতে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার জন্য জনমত গড়ে ওঠে।
১৯৫০ সালে ৬৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। ১৯৫২ সালের ১০ এবং ১৩ ফেব্রুয়ারী এই কমিটি দুটি সভা কর। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার এই আন্দোলন এতটাই তীব্র আকার ধারন করে যে ১৫জনেকে সে সময় কারাবরণ করতে হয়। এরপর ১৯৫৩ সালের এক জনসভায় পূর্ববঙ্গীয় আইনসভার সদস্য প্রখ্যাত আইনজীবী জনাব মাদার বখশ , বিশ্ববিদ্যালয় তৈরী না হলে রাজশাহীকে আলাদা প্রদেশ ঘোষনার হুমকি দেন। তার এই হুমকি কাজে আসে। যার ফলশ্রুতিতে ১৯৫৩ সালের ৩১ মার্চ প্রাদেশিক আইন সভায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা আইন পাশ হয়। এবং একই বছর ৬ এপ্রিল থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় তার যাত্রা শুরু করে।
প্রথমদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাশ শুরু হয় রাজশাহী কলেজে।প্রশানিক কাজ চলে পাশের রেশম কুঠিতে। ১৯৫৬ সালে মতিহারে বিশ্ববিদ্যালয়টির নিজস্ব ক্যাম্পাস তৈরীর কাজ শুরু হয় এবং ১৯৬৪ নাগাদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় তার নিজস্ব ক্যাম্পাসে সম্পুর্ণভাবে নিজেদের কার্যক্রম শুরু করে।
বিশ্ববিদ্যালয়টি যেমন তৈরী হয়েছিল এক আন্দোলনের মাধ্যমে, তেমনি দেশের স্বাধীনা যুদ্ধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। যার প্রমাণ হয়ে আছেন শহীদ শামসুজ্জোহা,শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার,শহীদ হবীবুর রহমান স্যারদের মত শহীদ বুদ্ধিজীবীরা।

Subscribe to our Awesome Newsletter.